তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা, সংঘর্ষে নিহত ১৯৪

আপডেট : July, 16, 2016, 10:14 am

আলোকিত সময় ডেস্ক->>>   তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সেনাবাহিনীর একাংশের চালানো অভ্যুত্থানের চেষ্টা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে।
শুক্রবার রাতে শুরু হওয়া সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার সময় সংঘর্ষে অন্তত ১৯৪ জন নিহত ও এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, সেনাবাহিনীর একটি অংশের এই অভ্যুত্থান চেষ্টা ‘ভণ্ডুল’ হয়ে যাওয়ার পর সেনাপ্রধান হুলুসি আকারকে ‘নিরাপদ স্থানে’ সরিয়ে নিয়েছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। ভারপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান করা হয়েছে জেনারেল উমিত দুনদারকে। এপি জানায়, দায়িত্ব পাওয়ার পর টেলিভিশন ভাষণে দুনদার বলেন, সরকার উৎখাতের চেষ্টার চক্রান্তের ঘটনায় ১৯৪ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১০৪ জন চক্রান্তকারী, ৪১ জন পুলিশ ও ৪৭ জন সাধারণ মানুষ ও দুইজন সরকার পক্ষের সেনা। ‘সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ’ মন্তব্য করে উমিত বলেন, অনেক সেনা সদস্যকে ‘অজানা স্থানে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিবিসি বলছে, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা ও ইস্তানবুলে শুক্রবার রাতে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর একাংশ অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালায়। এরপরই সরকার উৎখাতের পক্ষে-বিপক্ষের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। শনিবার সকালেও আঙ্কারা ও ইস্তানবুলের পুলিশ সদর দফতর এলাকাতে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল।অবকাশ যাপনের মধ্যেই সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার খবর পান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। এর পরপরই তিনি ইস্তাম্বুল পৌঁছে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে’ বলে জানান। দেশে ‘ব্যর্থ’ এক সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার পর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান শনিবার ইস্তানবুল বিমানবন্দরে যখন সাংবাদিকদের সামনে কথা বলছিলেন, তখন তার চারপাশ ঘিরে ছিল উল্লসিত কর্মী-সমর্থক। সাংবাদিক সম্মেলনে এরদোয়ান অভ্যুত্থানকে ‘দেশদ্রোহিতা’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘যারা এর পেছনে ছিলেন তাদের বড় মূল্য দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানে জড়িত কয়েকজন অফিসারকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে, আমি এখন সেনাবাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান চালাব।’

প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের পর অন্তত ২০০ সেনা দেশটির ইস্তানবুলের বসফরাস সেতুতে আত্মসমর্পণ করেন। আটক করা হয় দেড় হাজারের বেশি সেনা সদস্য।এর আগে এরদোয়ানের হাজার হাজার সমর্থকের বিক্ষোভের মুখে সেনা বাহিনীর বিদ্রোহী অংশ ইস্তাম্বুল বিমান বন্দর থেকে সড়ে যেতে বাধ্য হয়। সামরিক অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার সমর্থক বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেছেন, পরিস্থিতি এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে এসেছে, এবং রাজধানী আঙ্কারার আকাশে বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে তুরস্কের ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক বিবৃতিতে সকল পক্ষকে দেশের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সমর্থন করার জন্য এবং রক্তপাত এড়ানোর আহ্বান জানান।

সম্পাদনা: এস এইচ টি