

ডেস্ক রিফোর্ট->>>
বাবা-মার কাছে সুইসাইড নোটে আবেগঘন কথা লিখে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী নুসরাত জাহান ঐশী। ঐশী গাইবান্ধা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে আত্মহননের এই ঘটনা ঘটে।
সুইসাইড নোটে ঐশী লেখেন, ‘আমি তোমাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি। আর কষ্ট দিতে চাই না। আমি চলে যাচ্ছি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। প্রতিমাসে আমার পিছনে তোমাদের ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হতো। আর খরচ করতে হবেনা। আমার দেহটা কাটাছেঁড়া করোনা। আমার মৃত্যুর পর দাফন করিও।’
পুলিশ ও ঐশীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার তালুক ইসাদ গ্রামে ঐশীর বাড়ি। তার বাবা বকসী মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে লিটন একজন মাছ ব্যবসায়ী।
তানজিদ হোসেন নামে ঐশীর এক বড় ভাই রয়েছে। সে কুড়িগ্রামে একটি পলিটেকনিক কলেজে তৃতীয় সেমিস্টারে পড়াশোনা করছে। ঐশী স্থানীয় একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পাশ করে গাইবান্ধা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ বছর নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে।
প্রায় আড়াই মাস ধরে ব্রিজ রোড এলাকার নজরুল ইসলামের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিল ঐশীসহ তার বাবা মা।
ঐশীর বাবা বকসী মো. আবুল কালাম আজাদ আদরের একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। ঐশীর মাকে পাশের একটি বাড়িতে স্বজনরা সান্তনা দিচ্ছেন।
নিহতের বাবা লিটন বকসী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ঐশী ছোট বেলা থেকেই আমার বুকের উপর সব সময় শুয়ে থাকতো। আমাকে সব সময় বলতো আমি মায়ের পেটে ছিলাম না। ছিলাম বাবা তোমার পেটে। আমি কখনও ঐশীর আবদার অপূর্ণ রাখতাম না। অভাব কি জিনিস ওকে কখনও বুঝতেও দেইনি। সেই মেয়ে আজ আমাকে ছেড়ে চলে গেল। ফাঁকি দিয়ে চলে গেল না ফেরার দেশে।’
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঐশীর হাতের লেখা একটি সুইসাইড নোট তার বিছানায় পাওয়া গেছে। ওই সুইসাইড নোটের লেখার সাথে তার স্কুলের খাতার লেখার মিল পাওয়া গেছে। ঐশীর বাবা মা ও বাড়ির মালিকসহ স্থানীয় সুধিমহলের কোন অভিযোগ না থাকায় ঐশীর লাশ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (০৩ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাইবান্ধা শহরের ব্রিজ রোড এলাকার ভাড়া বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।