সোনাগাজীতে ২ কোটি টাকার সরকারি গাছ হরিলুট

আপডেট : December, 2, 2017, 4:55 am

 

জাবেদ হোসাইন মামুন->>>
ফেনীর সোনাগাজীতে সড়কের পাশের বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২ কোটি টাকার সরকারি গাছ হরিলুট হয়ে গেছে। এ নিয়ে সচেতন মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও বন বিভাগের উদাসীনতা এবং কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারণে এই হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এতে এক দিকে যেমনি সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে অন্যদিকে উপকারভোগীরাও আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বন বিভাগ, এলাকাবাসী এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী-সোনাপুর থেকে সোনাগাজী হয়ে চট্রগ্রামের জোরারগঞ্জ পর্যন্ত সড়কটির উন্নয়ন ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে পরিপূর্ণ কাজ সম্পাদনের কথা রয়েছে।ফেনীর অংশের সাহেবের ঘাট থেকে মুহুরী প্রজেক্ট পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সড়কটির দু’পাশে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার গাছ ছিল। সড়কটির দু’পাশ বর্ধিত করণের কারণে গাছগুলো কাটতে হবে। এই মর্মে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিনহাজুর রহমান সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বিধি মোতাবেক দরপত্র আহবান করার জন্য চিঠি প্রদান করেন। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বন বিভাগকেও চিঠি প্রদান করেন। বন বিভাগের দাবি ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে সড়কের দু’পাশে গাছ গুলো লাগিয়েছেন অধুনালুপ্ত এনজিও সেবা ও আশা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন না করায় গাছগুলো হরিলুট হয়ে গেছে। বন বিভাগের উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র ভৌমিক জানান, গাছগুলো লাগিয়েছেন অধুনালুপ্ত এনজিও। দরপত্র আহবান করার কথা ছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিন্তু বন বিভাগের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় লিখিতভাবে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। এ দিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্যসহকারি মো. কামাল উদ্দিন দাবি করেন অধুনালুপ্ত এনজিওর লাগানো গাছের একটি অংশের মালিক সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, এনজিও কর্তৃপক্ষ (যদি থাকে), উপকারভোগী জনগণ। নিলামে না দেয়ার ব্যাপারে তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করতে বলেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফেনীর নির্বাহী প্রকোশলী মাসুদুল করিম জানান, গাছগুলোর মালিক ছিল এনজিও তাই আমরা নিলাম দিতে পারি নাই।
এ দিকে সড়কের দু’পাশের গাছগুলো এলাকার প্রভাবশালী মহল, বাড়ি সংলগ্ন যার-যার মুখপাত অনুযায়ী, স’মিল মালিক জয়নাল আবেদীন কোম্পানী, এ ছাড়া কিছু বখাটে চোর এসব গাছ হরিলুট করে নিয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। কমদামী অনেকটা আকার্যকর, বাঁকা ও অপ্রয়োজনীয় গাছগুলো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্কেভেটর দিয়ে উপড়ে ফেলে রেখেছেন। সেগুলোর ডাল-পালাও প্রভাবশালীরা হরিলুট করে নিয়ে গেছে।
এসব সরকারি গাছ হরিলুটের ব্যাপারে জানতে চাইলে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মদ মিনহাজুর রহমান সড়ক ও জনপথ বিভাগের উদাসীনতাকেই দায়ী করে বলেন, আমি গাছগুলো নিলাম দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত চিঠি দিয়েছি কিন্ত তারা কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এ দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোক জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্য সহকারি মো. কামাল উদ্দিন তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দোহাই দিয়ে অনেকগুলো গাছ সোনাগাজীর বিভিন্ন স’মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এলাকাবাসী এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।