গ্রাম্য সালিশ-বিচার মানি তালগাছ আমার-আলোকিত সময়

আপডেট : February, 24, 2018, 7:06 pm

এন,এস মামুন->>>
আমাদের দেশে সমাজ জীবনে সালিশ বিচার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।গ্রামীণ সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিটিমানুষ প্রত্যক্ষ,পরোক্ষভাবে সালিশ ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত।গ্রাম্য বিচারব্যবস্থা আমাদের পূর্ব পুরুষের আমলেও ছিল আজও তা বহাল আছে,তবে এর আধুনিকায়ন হয়েছেবিভিন্নভাবে।

আগেকার সালিশি বিচার সাধারণত সাদা দাঁড়িওয়ালা বয়স্ক মুরব্বীয়ানরা করতেন যাদের ছেলে মেয়ে,নাতি,নাতনী আছে।তারা অনেকেই লাঠি ভর করেই বিচারের আসরে আসতেন। বিচারের আসরে তাদের আপ্যায়ন করা হতো আর বিচার কার্য পরিচালনা করতেন।কথা বলতেন অনেক ভেবে চিন্তে যুক্তি সম্বলিত’।
অতীত এবং বর্তমানের চিত্র একটু ভিন্ন নাতির বয়সি নবীনরা,অদক্ষরা বিচার করছেন।অনেকেই নামের পূর্বে বিশিষ্ট সমাজসেবক লিখেন।তাদের এই সব উদ্ভট আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তারা বলে’ওয়াটসআপ ম্যান, গণতান্ত্রিক দেশে সবার সমান অধিকার।
হাতে মোবাইল মাথার উরপ সানগ্লাস সিগারেটতো আছেই,ফোন কল রিসিভ করে বলছে আমি একটা জটিল সালিশে আছি আপনার সালিশের ডেট বদলান,এই হচ্ছে বর্তমান হাল।এই ধরনের ভাবভঙ্গি দেখে এবং শুনে আমার একটি রূপকথা মনে পড়ছে কি ব্যাঙের নালি খেত এর মাজে তারের বেড়া,বড়ই অর্থবহ কথা।যা আমাদের সমাজ জীবনে বিপদসীমার
উপর অতিক্রম করছে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে।কিন্তু অতি দুঃখজনক হলেও সত্যি গ্রাম সালিশ ব্যবস্থা এখন অর্থহীন সহজসরল,সাধারণ মানুষকে শোষণের অন্যতম হাতিয়ার।আজকাল ৮০% সালিশ বিচার ন্যায়সঙ্গত হয় না।এর পেছনে অনেকগুলো কারণ কাজ করে।আমরা সাধারণত ঘুষ,দুর্নীতি,স্বেচ্ছাচারিতা, লুটপাট,স্বজনপ্রীতির জন্য দায়ীকরি সরকারি কর্মচারি কর্মকর্তা কেরানী থেকে শুরুকরে উপরস্ত সচিব পর্যায়ের
কর্তা মেম্বার,চেয়ারম্যান,রাজনৈতিকনেতা,পাতিনেতা,
এমপি,মন্ত্রীদের।দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমাদের
দেশের এক কালের মহৎ গুণাবলীর অধিকারী সেই ন্যায়ের প্রতীক সালিশ বিচারক গ্রাম্য মাতব্বররা আজকাল বিড়ি,সিগারেট,চা,পান থেকে শুরু করে নগদ অর্থ সালিশের ফিস হিসেবে গ্রহণ করে উল্টাপাল্টা বিচার করছেন।ন্যায়কে অন্যায় আর অন্যায়কে ন্যায়ে পরিণত করাই তাদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে,যা সমাজে সৃষ্টি করছে অস্থিরতা।যেমন রাজনৈতিক,
অর্থনৈতিক,ন্যায়ের পক্ষে লোক না থাকা,ধরিমাছ না ছুঁই পানি অবস্থান।একদিনের সালিশ বারবার,বংশ প্রীতি বা স্বজনপ্রীতি সালিশ বসার পূর্বে দুই পক্ষ থেকে টাকা জমানেয়া,মিথ্যা সাক্ষী,চূড়ান্ত মিমাংসা না করা,
কুচক্রী লোকের কু’পরামর্শ,আইন সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা এবং দেশে যে সরকার থাকুক না কেন সেই সরকারের প্রতিনিধির ক্ষমতার দাপটে প্রতিপক্ষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চি।আজকের দুনিয়ায় বেশিরভাগ
বিচারকদের মধ্যে দূরভিক্ষণ যন্ত্র দিয়ে সততা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।বিচার মানি তালগাছ আমার সমাজে এরকম স্বভাবের মানুষ বিস্তার করছে,এরকম স্বভাব থেকে উত্তরণ হওয়া দরকার।সবাইকে বলতেছি সমস্যা সমাধানে সবসময় পজেটিভ চিন্তা করুন,
আত্ববিশ্বাসী হয়ে বলুন এটা কোনো সমস্যা নয়।
আমাদের নিত্যদিনের সামাজিক সমস্যাগুলো ঠাণ্ডা মাথায় নিজ বিচারগুণে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা সর্বোত্তম পন্থা।নিজের সমস্যা অন্যকেদিয়ে সমাধানের
মানে হচ্ছে নিজ উদ্যোগে আপনি আপনার সমস্যা দ্বিগুণ বড় করছেন।
আলোচনার পরিসমাপ্তি ঘটাতে হবে।অনেক কিছুই অগোছালোভাবে আলোচনা সমালোচনা করে ফেলেছি।বিচারকদের মত বুদ্ধি শুদ্ধি করে ঘুরায়ে পেচায়ে আলোচনা করতে পারিনি বলে দুঃখিত। সমস্যা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করতে করতে মুখে ফেনা না তুলে সমস্যা থেকে কিভাবে উত্তরণ ঘটানোযায় তা নিয়ে নতুন চিন্তা,চেতনা,ভাবনা হতে পারে সমাজ উন্নয়নে আমাদের দিক নির্দেশনা দুর্নীতির এ মহাপ্লাবনে হাতে গোনা কিছু লোক এখনও সততা,ন্যায়নিষ্ঠা,বজায় রেখে চলছেন নিতান্ত কষ্ট ত্যাগ স্বীকার করে।আগের মতো এখনো সৎ বিচারক স্বল্প হলেও আছেন যারা হক কথা বলেই যাচ্ছেন।তবে ভেজালের ভিড়ে তারা নিতান্ত’ই কোণঠাসা বলেই মনে হয়।