সোনাগাজীর মতিগঞ্জ হাই স্কুলে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট : April, 3, 2018, 7:25 pm

 

জাবেদ হোসাইন মামুন->>>
ফেনীর সোনাগাজীর মতিগঞ্জ আর.এম.হাট.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির দুর্নীতি,অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে। সকাল ১০টার দিকে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মতিগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড ও রিয়াজ উদ্দিন মুন্সির হাট পর্যন্ত সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূণরায় স্কুল মাঠে এসে প্রতিবাদ সভা করে। এসময় স্কুল প্রাঙ্গন এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে পুলিশদল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে আগামী ১২ এপ্রিল সমজেতা বৈঠকের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
৫ জন অতিথি শিক্ষক অপসারণ, অতিরিক্ত সেশন ফি আদায়, অতিরিক্ত বেতন আদায়, স্কুলের উন্নয়ন তহবিলের টাকা আত্মসাৎ, অনলাইন ফি আদায়, প্রযুক্তি ফি আদায়, নির্ধারিত ব্যাচের জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায়, নির্ধারিত দর্জি দিয়ে পোশাক সেলাই করণে বাধ্যতামূলক, অযোগ্য শিক্ষক দিয়ে পাঠদান, বাধ্যতামূলক কোচিং, কোচিংএর নামে বাধ্যতামূলক ফি আদায়, শ্রেনি কক্ষে বৈদ্যুতিক পাখা না লাগানো সহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম সারওয়ারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে বলে জানিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নানা অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। দশম শ্রেনির এক শিক্ষার্থী জানান, প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান গত কয়েক মাস পূূর্বে ওই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে শ্রেনি কক্ষে ইংরেজি বিষয়ে পাঠদানের সময় তার পাঠদান শিক্ষার্থীরা না বুঝলেও তিনি ওই শ্রেনিতে গিয়ে ওই বিষয়ে পাঠদান করেন। এ ছাড়া ন্যাশনাল সার্ভিসের আওতায় সাম্প্রতিক সময়ে যোগদানকৃত ৫জন শিক্ষকের পাঠদানও শিক্ষার্থীরা বুঝেননা এবং শিক্ষার্থীদের ভাষাও ওই শিক্ষকরা বুঝেননা বলে দাবি করেছেন। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির দুর্নীতি, অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার সত্যতা নিশ্চিত করে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জোস্নারা বেগম ও মুক্তিযোদ্ধা মহব্বত উল্যাহ মিয়া কমিটির পদ থেকে পদত্যাগের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জনিয়ছেন। তারাও দাবি করেন বিদ্যালয়টির শিক্ষা ব্যাবস্থা তলানীতে গিয়ে পৌঁছেছে। দু’জনের পাপের ভাগ তারা নিতে রাজী নয় বলেও দাবি করেন। ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মাস্টার রফিকুল ইসলামও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমার দুই জন মেয়ে ওই বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মেধাবী শিক্ষার্থী। বিদ্যলয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা তলানীতে চলে গেছে। উন্নয়নের নামে বিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা হরিলুট হচ্ছে। মতিগঞ্জ ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ডা. মাহফুজ আলম মিয়াজীও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের রামরাজত্ব চলছে, যেন দেখার কেউ নেই। কবির আহম্মদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তিও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরীক্ষার ফলাফল তলানীতে অথচ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গলা কাটা ফি আদায় করে নিচ্ছে তারা।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম সারওয়ার তাদের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগের কোন সত্যতা নেই বলে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন অযৌক্তিক বলে দাবি করেছেন। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. হারুনুর রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন পুলিশ তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আগামী ১২ এপ্রিল এ ব্যাপারে সমজোতা বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।