পরশুরামে সমবায় সমিতির নামে ২০লাখ টাকা নিয়ে উধাও|আলোকিত সময়

আপডেট : January, 21, 2020, 12:39 am

 

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি-
পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সুবার বাজারে রজনীগন্ধা সার্বিক উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি সমবায় সমিতির স্থানীয় ক্ষুদ্র দোকান মালিক, চা দোকান মালিক, কসমেটিক্স,কনফেকশনরী সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সঞ্চয় আদায় করে প্রায় ২০লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। শুধু দোকান মালিক নয় সুবার বাজার অগ্রনী ব্যাংকের কাছ থেকেও সমিতির নামে ৮০হাজার টাকা ঋণ পরিশোধ না করে উধাও হয়ে গেছেন। সমিতির সভাপতিকে গত ২/৩মাস ধরে খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা এবং তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।
রজনীগন্ধা সার্বিক উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড এর নিবন্ধন রয়েছে কিনা এই বিষয় রবিবার জানতে চাওয়া হলেও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মিলন কান্তি দাস জানান এই নামের কোন সমিতি সম্পর্কে তার কিছু জানা নাই। অপরদিকে সোমবার অফিস সহকারী মনছুর জানান রজনীগন্ধা সার্বিক উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড উপজেলা সমবায় অফিসের নিবন্ধকৃত সমিতি।
স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন সমিতির সভাপতি পালিয়ে যাবার খবর শুনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করেছেন। এবং ক্ষুদ্ব জনতা রজনীগন্ধা সার্বিক উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সুবার বাজার কার্যালয়ে তালা ঝলিয়ে দিয়েছেন।
সঞ্চয় বিনিয়োগ আত্বনির্ভরশীল রজনীগন্ধা সার্বিক উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড এর মুল মুল নীতি সঞ্চয় ও ঋনের পাস বইতে দেখা যায় করিম এন্টারপ্রাইজ রেজিঃ নং ৭১/১৮ নামে নিবন্ধন নেয়া হয়েছে। তার পর থেকে সুবার বাজারের দাউদ মিয়ার বিল্ডিং এর নিচ তলা ঠিকানা দিয়ে শত শত গ্রাহকের কাছ থেকে সঞ্চয় সহ এফডিআর ডিপিএস এবং দৈনিক আমানত সংগ্রহ করে গ্রাহকদের প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস বন্ধ করে মালিক সহ সঞ্চয় আদায় কারীরা পালিয়ে যায়।

এই বিষয় গ্রাহকরা অভিযোগ করলে পরশুরাম উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মিলন দাস জানান তার পক্ষে কিছুই করার নাই । এর আগেও একাধিক সমবায় সমিতি গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা আত্বসাত করলেও উপজেলা সমবায় কার্যালয় থেকে কোন ধরনে উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। উপজেলার পৌর এলাকার মো মোস্তফা নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী, বোন সহ পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে প্রতীতি বহুমুখী সমবায় সমিতি স্বার্তাধিকারী মিজানুর রহমান প্রায় ৩০ হাজার টাকা সঞ্চয় নিয়ে আত্বসাত করায় প্রতীতি সমবায় সমিতি সভাপতি মিজানুর রহমানের বিরুদ্বে সমবায় কর্মকর্তা মিলন দাসের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিলেও সমবায় কর্মকর্তা গ্রাহকদের কোন সহযোগিতা না করে বরং বিভিন্ন অজুহাতে অভিযোগকারীকে হয়রানি করে যাচ্ছেন বলে পুলিশ কর্মকর্তা মো মোস্তফা অভিযোগ দিয়েছেন।
সুবার রাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় দের অভিযোগ থেকে জানা গেছে করিম এন্টারপ্রাইজের মালিকানাধীন রজনীগন্ধা সার্বিক উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটে মো নুরুল করিম এবং তার সহযোগী আজাদ কে দিয়ে সুবার বাজার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সঞ্চয় জমা,এফডিআর,ডিপিএস এবং দৈনিক সঞ্চয় জমা করতেন।
সুবার বাজারের চা দোকান মালিক বাবুল জানান তার কাছ থেকে ৪৮ হাজার টাকা সঞ্চয় আদায় করে বর্তমানে করিম অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যায়, এছাড়াও মাওলানা ইউসুফ এর প্রায় দেড়লাখ টাকা, হাসান কসমেটিক্স এর ১লাখ টাকা, রাখাল নামের আরেক ব্যবসায়ীর ৫০হাজার টাকা, উত্তম ২৯ হাজার টাকা, মমিনের ২০হাজার টাকা সহ অর্ধশত ব্যবসায়ীর প্রায় ২০লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বর্তমানে উধাও হয়ে গেছে রজনীগন্ধা সার্বিক উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড এর লোকজন। এছাড়াও সুবার বাজারের অগ্রনী ব্যাংক শাখার কাছ থেকে সমিতির নামে ৮০হাজার টাকা ঋৃন নেওয়াতে বর্তমানে সমিতির ঘরে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে বাংক কর্মকর্তারা। অগ্রনী ব্যাংকের কর্মকর্তা মাহমুদুল ইসলাম জানান তার শাখা থেকে মো নুরুল করিম ৮০হাজার টাকা ঋন নিয়েছে। কিন্তু একমাস ধরে তার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছেনা।
সুবার বাজারের চা দোকান মালিক বাবুল অভিযোগ করেন তার কাছ থেকে ৪৮ হাজার টাকা সঞ্চয় নিয়ে সমিতির লোকজন পালিয়ে গেছে। বিষয়টি তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কে অবহিত করেছেন।
জানা যায় মো নুরুল করিম পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের আশ্রাফপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে।
জানা যায় পরশুরাম উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মিলন কান্তি দাসের গাফিলতি ও দায়িত্বে অবহেলার কারনে ইতিমধ্যে পরশুরামে অনন্ত ১০টি প্রতিষ্ঠান সঞ্চয়ের নামে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। মিলনকান্তি দাস অসুস্থ্যতার অজুহাতে বেশীর ভাগ সময় অফিসে অনুপস্থিত থাকেন।
পরশুরাম বাজারের আত্বকল্যাণ সমবায় সমিতি গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে গত কয়েকবছর ধরে অফিস বন্ধ করে পালিয়ে গেছে। এছাড়াও প্রতীতি বহুমুখী সমবায় সমিতির গ্রাহকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ আত্বসাত করে সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে জুনিয়র স্কলার স্কুল প্রতিষ্ঠা করে, কিন্তু গ্রাহকদের টাকা এখনো পরিশোধ করেনি। এছাড়াও জেলা সমবায় অফিস থেকে পরশুরাম উপজেলার তিনটি প্রতিষ্ঠানকে রিকোজেশান করতে লিখিত চিঠি দেয়া হলেও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মিলন কান্তি দাস তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে তাদের বিরুদ্বে আইনি ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করছে।
পরশুরাম উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মিলন কান্তি দাস জানান রজনীগন্ধা সার্বিক উন্নয়ন সমবায় সমিতি নামের কোন প্রতিষ্ঠান আছে কিনা তার জানা নাই, গ্রাহকদের টাকা আত্বসাত করলে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাউর পাথর গ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা মো মোস্তফা তার পরিবারের সদস্যদের টাকা আদায়ের বিষয় লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন কার্যকরী প্রদক্ষেপ না নেয়ার বিষয় মিলন কান্তি দাস কোন জবাব দিতে রাজি হননি।