সোনাগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষন ও সিরিয়াল ডাকাতির মূল হোতা পিচ্চি কামরুল গ্রেফতার

আপডেট : May, 18, 2020, 6:35 pm

বিশেষ প্রতিনিধি->>

ফেনী সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণ ও তিন বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় মূলহোতা পিচ্চি কামরুলকে গ্রেফতার করেছে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ।

জানা যায়, সোনাগাজী ১ নং চর মজলিশপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে ২৩ এপ্রিল রাতে চা বিক্রেতার বাড়িতে ৫-৬ জন মুখোশ পরা অস্ত্রধারী ডাকাত হানা দেয়। পরবর্তীতে ঘরে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা না পেয়ে পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চা দোকানীর মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রীকে একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করায় সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মঈন উদ্দিন আহমেদকে ২৪ এপ্রিল শনিবার প্রত্যাহার করে। পরে ফেনী সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সাজেদুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে মামলার অগ্রগতি ও সার্বিক বিবেচনায় সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে তিনি যোগদান করেন।

সাজেদুল ইসলাম যোগদানের পর একই ইউনিয়নের চান্দলায় ঘটে যাওয়া সিরিয়াল ডাকাতির ঘটনা ও মাদরাসাছাত্রী ধর্ষণসহ ডাকাতির ঘটনায় মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন তিনি।

ঘটনায় উত্তর চর মজলিশপুর থেকে জোবায়ের ইসলাম সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। সে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি দেয়। তার স্বীকারোক্তি মতে দফায়-দফায় বিভিন্ন জায়গা থেকে মাদরাসাছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ৫ জন ও চান্দলায় ডাকাতির ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে সোনাগাজী মডেল থানার পুলিশ।

১৭মে সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাজেদুল ইসলামের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ নওশের কোরেশীর যৌথ অভিযানে বিষ্ণুপুরের ধর্ষণ ও ডাকাতি মামলা এবং চান্দলার ৩ বাড়ি ডাকাতি মামলার আটককৃত ৩ জন ডাকাতের বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিত প্রকাশিত ও ঘটনায় জড়িত ডাকাত পিচ্চি কামরুল (২২) কে ফেনী জেলার ফুলগাজী থানা এলাকায় তার আত্মীয় বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। সে বিষ্ণুপুর এলাকার শাহিনের ছেলে।

এই ঘটনায় আটককৃত সোহাগের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি অনুযায়ী ১জন পলাতক রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী অনেকের দাবি, দীর্ঘদিন যাবৎ এই সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধী চক্র বিগত ৪/৫ বছর পূর্বেও এলাকার ছিঁচকে চুরির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। এলাকায় বাজার ও ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এই সংঘবদ্ধচক্রকে লালন করে আসছে চর মজলিশপুর ইউনিয়নের থানার চোর্স (গরু আলম) ।
তার ছত্রছায়ায় গত ২/৩ বছর থেকে নানা অপরাধে তাদের পুলিশ আটক করলেও তাদের ছাড়িয়ে আনার কারণে ক্রমাগত বাড়তে থাকে তাদের অপরাধের পরিধি, ছিঁচকে চুরি থেকে ডাকাতি এরপর ডাকাতিসহ ধর্ষণ।

গত দুই বছরের মধ্যে এলাকায় চুরি-ডাকাতিসহ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ডজনখানেক। এরমধ্যে দু-একটি মামলা ছাড়া সব কয়টি ঘটনা এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে ধামাচাপা করে দেয় এই গরু আলম। শুধু তাই নয় দু একটি পরিবার সাহস করে থানায় অভিযোগ করলেও সেখান থেকেও ছাড়িয়ে নিয়ে আনার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

গুরু আলমের এমন প্রভাবের কারণে সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের ক্রমাগত সাহস বেড়েই চলছে, এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এখনই সময় আটককৃতদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের সরদারের নাম বেরিয়ে আসবে এমনটাই দাবি এলাকার সচেতন মহলের।

সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাজেদুল ইসলাম কামরুল’কে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে আলোকিত সময়কে জানান, ধর্ষণ ও ডাকাতিসহ চান্দলার ৩ বাড়ি ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের ইতিমধ্যে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি, আরো যারা পলাতক রয়েছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আটককৃত কামরুলকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে, আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে জিজ্ঞাসাবাদে তার থেকে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানান তিনি।