আওয়ামীলীগ নেতা নুরুন্নবী ভুট্টো আবেগঘন কথা

আপডেট : November, 14, 2020, 3:16 pm

বিশেষ প্রতিনিধি-

মাননীয় সভানেত্রী, এ সিন্ডিকেট ভাংতেই হবে, না হয় ভয়ঙ্কর বিপদ অত্যাসন্ন।

বেশ কয়েকজন সহযোদ্ধা ফোন করে বলছে সারা দেশে একটা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তাঁদের নিকট নীতি, আদর্শ, ত্যাগ মূল্যহীন। তারা চিনে শুধুই টাকা। আসছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তারা ফাদ পেতে বসে আছে। নমিনীশন বাগিয়ে দেয়া, নির্বাচনে বুজরুকী করে বিজয়ী করে দেয়া, অসৎ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা সহ অনেক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা নিয়ে বসে আছে। অথচ আমাদের স্বাধীনতার মূল মন্ত্র ছিল ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

সারা দেশের আওয়ামীলীগের বঞ্চনার খবর নিয়ে অবাক হই। শুধু একটি জেলার চিত্র আওয়ামীলীগের আমার জানা মতে এমন- তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। তার ভাইয়ের বউ কে এপিএস হিসেবে রেখেছেন। তার ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, বোন- উপজেলা চেয়ারম্যান, ছেলে- এম.পি, ভাতিজা- ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, নাতি- উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, ভাতিজা-পল্লী বিদ্যুতের চেয়ারম্যান। জেলায় অন্য নেতারা আর রাজনীতির কি দরকার? দল খাদে পড়লে তখন বঞ্চিতরা সুবিধাভোগীদের দেখিয়ে দিবে।

আবার দেখা যায়, তিনি মন্ত্রী, তাঁর বউ মেয়র অথবা এমপি, অথবা উপজলা চেয়ারম্যান। এমনও আছে চৌদ্দগোষ্ঠীকে দিয়ে দলের কমিটি সাজিয়েছে অথবা রাজনৈতিক নিয়োগ যেমন- বিআরডিবি, ক্রীড়া সংস্থা, রেড ক্রিসেন্ট, বণিক সমিতি, স্কুল- মাদ্রাসা কমিটি সব কিছু নিজের পরিবারকে দিয়ে কুক্খিগত করে রেখেছে।

90 সাল থেকে ছাত্র রাজনীতি করেছি। 96 এর 15ই ফেব্রুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে নির্বাসিত হয়েছি ভারতে। বাড়ী ঘর লুট-পাট হয়েছে। 2001 সালের বিএনপি জামাতের রোষানলে পড়ে সব হারিয়েছি।

আামার সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ আমার বাবা, তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু ছিল না। 4 দলীয় জোট সরকারের সময় সব হারিয়ে তিনি ব্রেন ষ্ট্রোক করেন। বয়স বেশি হয়নি তাঁর। অসময়ে চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। তাঁর অপরাধ তাঁর সব ছেলে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত।

নিজেকে বড় অপরাধী মনে হয়। না হয় আমার উপজেলার অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগের হাজার হাজার লোকের ভূরি ভোজ হয় অথচ আমি বা আমার পরিবার কেউই দাওয়াত পায় না। তাঁর মানে উপজেলার 10 হাজার লোকের মধ্যে আমার সিরিয়াল নেই। ঢাকায় এলাকার নেতাদের জমকালো অনুষ্ঠানে এলাকার হাজারো লোক আসে, তাতেও দাওয়াত পাই না। 2001 সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ হিসেবে গেজেটে নাম আছে। কই, কেউই খবর রাখে না আমার পরিবারের।

শ্রদ্ধেয় আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাছিম ভাই আমার ছোট ভাইটিকে একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করেছে। শ্রদ্ধেয় তপন ভাইয়ের জোরালো ভূমিকা ছিল এ চাকুরী দেয়ার ক্ষেত্রে। মির্জানগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সার্ব ক্ষণিক ফলোয়াপের কারনে এ চাকুরী হয়েছে। কৃতজ্ঞ তাঁদের প্রতি।

মাননীয় নেত্রী, পদ-পদবী দেয়ার সময় খেয়াল রাখা উচিত সব একই পরিবারে চলে যাচ্ছে কি-না। আওয়ামীলীগ একটি প্রাচীন তথা বিশাল দল। এ দলে হাজার হাজার নেতা-কর্মী সৃষ্টি হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদকের ব্যক্তিগত একটি উইং থাকা জরুরী। যাতে থাকবে বিভাগ ওয়ারী পদ-পদবীর খতিয়ান। সমস্ত বৈষম্য সাধারণ সম্পাদকের নজরে নিয়ে আসবে উক্ত উইং। শক্ত হাতে দমন করতে হবে সমস্থ বৈষম্য।

এত বঞ্চনার মাঝে ও হতাশ নই। আশাকরি মাননীয় সভানেত্রী দলের প্রতি নজর দিবেন। সহসাই সারাদেশের বঞ্চিতদের বঞ্চনার অবসান ঘটবে- এ প্রত্যাশা রাখছি আমার প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতি। আল্লাহ হাফেজ।