স্বপ্নে আদৃষ্ট হয়ে কলেজ ছাত্রীকে বিয়ে করলেন সোনাগাজীর কথিত পীর ৬৩ বছর বয়সী ফুল হুজুর

আপডেট : November, 20, 2020, 5:00 pm

জাবেদ হোসাইন মামুন->>>
স্বপ্নযোগে বিয়ের নির্দেশনা পেয়ে স্নাতক পড়ুয়া ২৩ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন ৬৩ বছর বয়সী জামশেদ আলম ওরফে “ফুল হুজুর” নামের ফেনীর সোনাগাজীর কথিত এক পীর।
উভয় পরিবারের সম্মতিতে বুধবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরের দিকে ১০ লাখ টাকা কাবিনে ঢাকার আদালত এলাকায় ফুল হুজুর তরিকার প্রধান দরবারে বড় আয়োজনে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সোনাগাজীতে ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগেও ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে। বিয়ের পর নবদম্পতি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। ওই ছাত্রীর বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের ফকিরহাট এলাকায়। ফুল হুজুর বিশ্ব সুন্নি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম হায়াতের অনুসারী।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘ তিন যুগেরও অধিক সময় ধরে সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের মৃত খুরশিদ আলমের ছেলে জামশেদ আলম ফতেহপুরী ওরফে ফুল হুজুর তার বাড়ির দরজায় একটি দরবার শরীফ খুলে বিভিন্ন ঝাড়ফুঁকের তদ্বীর করে আসছেন। এ সুবাধে স্থানীয় নারী-পুরুষ সহ দেশের বিভিন্নস্থানের মানুষদের সাথে তার পীর-মুরিদী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ৫ভাই ৪ বোনের মধ্যে শুধু ফুল হুজুর ও তার দুই বোন জীবীত রয়েছে। তার দরবারের পাশাপাশি ২০০৪ সাল থেকে তার নামের উপর একটি নূরানী মাদ্রাসাও পরিচালনা করে আসছেন। প্রতি বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি বড় আয়োজনে বার্ষিক ওরছও পালন করা হয় তার দরবার শরীফে। বার্ষিক ওরছে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে তার ভক্ত আশেকানদের আগমন ঘটে। তার অর্থায়নে পরিচালিত নূরানী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম বলেন, ওই ছাত্রীর পরিবারের সাথে ফুল হুজুরের সম্পর্কের কারণে সে হুজুর কে বিয়ে করতে অনুপ্রাণিত হন। এছাড়া হুজুরের ভক্ত আশেকানদেরও বিয়ের জন্য চাপ ছিল। হুজুর স্বপ্নের মাধ্যমে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করার নির্দেশনা পেয়েছেন। তার বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার জন্যও বিয়ে করা জরুরী হয়ে পড়েছে। ওই ছাত্রী ফেনী জিয়া মহিলা কলেজের অনার্স অধ্যয়নরত রয়েছে। হুজুরের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সে স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে পরিবারের অভিভাকদের সম্মতিতে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। সে বালিগাঁও ইউনিয়নের কাতালিয়া গ্রামের নুর বক্স মিয়াজীর বাড়ির এক প্রবাসীর মেয়ে।
ছাত্রীর নানা নুর করিম জানান, তার নাতনী ও তার পরিবারের সদস্যরা ফুল হুজুরের মুরিদ। হুজুরের সাথে নাতিনের বিয়ে দিতে পেরে আমরা খুশি। এতে রাস্ট্রীয় অথবা ধর্মীয় আইনের কোন ব্যর্তয় ঘটেনি। তবে বিয়ের ব্যাপারে ও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বিয়ে না করা প্রসঙ্গে জানার জন্য একাধিকবার ফুল হুজুরের মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার দরবারে গিয়ে তালাবন্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। মাদ্রাসার সামনে তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দেখা মিলেছে।