সোনাগাজীতে স্কেভটর চালককে ডেকে নিয়ে কোমরে পিস্তল গুজিয়ে ছবি তুলে ৪৬ হাজার টাকা আদায়, ইয়াবা ও পিস্তল সহ তিন সন্ত্রাসী গ্রেফতার

আপডেট : May, 23, 2021, 9:12 pm

স্টাফ রিপোর্টার->>>
ফেনীর সোনাগাজীতে এক স্কেভটর চালককে ডেকে নিয়ে কোমরে পিস্তল গুজিয়ে ছবি তুলে ৪৬ হাজার পাঁচ’শ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ইয়াবা ও পিস্তল সহ তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে সোনাগাজী মডেল থানার পুলিশ। তবে পুলিশের দাবি উদ্ধারকৃত পিস্তলটি খেলনা পিস্তল এবং মামলার আলামত হিসেবে সেটি জব্দও করা হয়েছে। রোববার ভোরে তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়ছে। মাদক, অস্ত্র উদ্ধার ও জিন্মি করে টাকা আদায়ের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন ছয় সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার কৃতরা হচ্ছে, চরচান্দিয়া ইউনিয়নের চরচান্দিয়া গ্রামের শফি মাস্টার বাড়ির মাঈন উদ্দিন হকের ছেলে মারুফ হোসেন প্রীতম (২৩), পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের চরগণেশ গ্রামের পুরাতন শেখ বাড়ির মৃত শেখ নিজাম উদ্দিন মিলটনের ছেলে শেখ মিরাজ উদ্দিন রিফাত (২২) ও একই গ্রামের আবু তাহের কন্ট্রাক্টরের ছেলে তানভীর হোসেন (২২)। গ্রেফতারকৃতদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। সোমবার রিমান্ডের শুনানীর দিন ধার্য করা হয়েছে। পুলিশ, ভুক্তভোগি ও এলাকাবাসী জানায়, ২১ মে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে চরচান্দিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চরচান্দিয়া গ্রামের স্কেভেটর চালক মো. শামীম হোসেনকে পুকুর সংস্কার করে মাটির কাটার কথা বলে মুঠো ফোনে মারুফ হোসেন প্রীতম নামে এক সন্ত্রাসী তাকে ডেকে নেয়। পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের সেলিম ম্যানশন নামে একটি বহুতল ভবনের নীচে গেলে প্রীতমের নেতৃত্বে পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা সন্ত্রাসী মিরাজ উদ্দিন রিফাত, তানভীর হোসেন, চরগণেশ গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে এমদাদুল হক দীপু, ওই গ্রামের আবু ছায়েদ মিঠু ও মো. ইব্রাহীম হৃদয় নামে ৭-৮জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাকে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে। তার প্যান্টের পকেটে থাকা ২৬ হাজার পাঁচ’শ টাকা চিনিয়ে নেয়। পরে পৌরসভার প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর শেখ কলিম উল্যাহ রয়েলের বাড়ির দক্ষিণ পাশে একটি নির্জন গলিতে নিয়ে আরো ৫০হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত চাঁদার জন্য তাকে মারধর করতে থাকে। মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে কলমা পড়তে বলে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তার কোমরে একটি পিস্তল গুজিয়ে দিয়ে ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে। ঘন্টাব্যাপী নির্যাতনের শিকার শামীম মৃত্যু ভয়ে শংকিত হয়ে তার পরিচিত ব্যবসায়ী বেলাল সর্দার নামে এক ব্যক্তির কাছে ৫০হাজার টাকা চেয়ে ফোন করেন। তিনি ২০হাজার টাকা দিতে পারবেন বললে শামীমের ব্যবহৃত মোটার সাইকেল যোগে সন্ত্রাসী মিরাজ ও দীপু পৌর শহরের কাস্মির বাজার সড়কে গিয়ে বেলাল সর্দার থেকে ২০হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শামীম শনিবার রাতে সোনাগাজী মডেল থানায় দ্রুতবিচার আইনে মামলা দায়ের করলে পুলিশের চারটি টিম শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শেখ মিরাজ উদ্দিন রিফাতের কাছ থেকে ১২পিস ইয়াবা ও তিন আসামির তথ্য মতে খেলনা পিস্তলটি উদ্ধার করা হয়েছে। বাকী আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছে। এঘটনায় এসআই মো. এয়াকুব বাদি হয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার সাথে জড়িত ও মামলার আসামিরা সবাই সরাসরি স্থানীয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও, সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই আখ্যা দিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী রবিন বলেন, তারা ছাত্রলীগের কেউ নয় এবং কোন পদ পদবীতে নেই। আমি দায়ীত্বপালন কালে কোন অপরাধীর স্থান ছাত্রলীগে হবেনা। আইনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি হোক।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাকী আসামিদেরও গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।