

- সোনাগাজীতে ভোর বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারি পদে ঘুস দিতে না পরায় নিয়োগ বাতিলের অভিযোগ-
কাওছার আহমেদঃ-
ফেনীর সোনাগাজীতে ভোর বাজার এডভোকেট বেলায়েত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারি কাম হিসাব সহকারি পদে ঘুস দিতে অস্বীকার করায়, নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়া সত্ত্বেও নিয়োগ বাতিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই পদে চাকরি প্রার্থী ও নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনকারী জহিরুল হক খান সজিব মিয়া এ অভিযোগ করেন। প্রধান শিক্ষক সহ নিয়োগ পরীক্ষায় নিয়োজিতদের বিরুদ্ধে তিনি এ অভিযোগ আনেন। প্রতিকার চেয়ে ফেনী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ায় শুক্রবার বিকালে তড়িঘড়ি করে পরিচালনা কমিটির সভা ডেকে নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে তার অভিযোগ। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, চাকরি প্রার্থী ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, ভোর বাজার এডভোকেট বেলায়েত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে বিধি মোতাবেক একজন করে অফিস সহকারি কাম হিসাব সহকারি, নৈশ প্রহরি, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া আবশ্যক চেয়ে গত ২৬ মে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ৩১ আগস্ট লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অফিস সহকারি কাম হিসাব সহকারি ১৬জন, নৈশ প্রহরি দুইজন, আয়া তিনজন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে দুইজন অংশ গ্রহণ করে। অফিস সহকারি কাম হিসাব সহকারি পদে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেন জহিরুল হক খান সজিব মিয়া। মৌখিক ভাবে তাকে নিয়োগের জন্য চুড়ান্ত করা হয়েছে মর্মে প্রধান শিক্ষক তাকে পরে দেখা করতে বলেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের সাথে দেখা করলে ডিজির প্রতিনিধি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদেরকে ম্যানেজ করার জন্য সজিবের নিকট প্রধান শিক্ষক তিন লাখ টাকা ঘুস দাবি করেন।
সজিব দাবিকৃত ঘুস দিতে অস্বীকার করায় প্রধান শিক্ষক নানা অজুহাতে টালবাহনা করতে থাকেন। প্রতিকার চেয়ে ৯সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ফেনী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অবেদন করেন সজিব। খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক তড়িঘড়ি করে শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন বিকালে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে বিদ্যালয়ে একটি সভা ডাকেন। সভায় অফিস সহকারি কাম হিসাব সকারি পদে নিয়োগ কার্যক্রম ও ফলাফল বাতিল করেন। বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবসা শিক্ষা উল্লেখ করা হয় নাই অজুহাত তুলে ওই পদের নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে তারা। নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফোরদৌস আরা বেগম ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরুল আমিন উপস্থিত থাকলেও নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল বাতিলের ম্যানেজিং কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেননা।চাকরি প্রার্থী জহিরুল হক খান সজিব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল অবৈধভাবে বাতিলের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক সহ নিয়োগ কমিটির সবার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম ঘুস দাবির কথা অস্বীকার করে বলেন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে ভুল ছিল ব্যবসা শিক্ষা চাওয়া হয়নি তাই ম্যানেজিং কমিটির সভায় ওই পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করা হয়। বিজ্ঞপ্তি ভুল থাকলে চাকরি প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই ও চুড়ান্ত নিয়োগ পরীক্ষা কিভাবে নিলেন? সেটার কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।ডিজির প্রতিনিধি ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, ঘুস দাবির বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে বিজ্ঞপ্তিতে ভুল হয়েছে বলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ম্যানেজিং কমিটি পূণঃবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্তের রেজুলেশনে আমার স্বাক্ষর নিয়েছে।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন বলেন, নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্তে বিজ্ঞপ্তিতে ভুলের কারণে ফলাফল বাতিল করা হয়েছে।বিজ্ঞপ্তি ভুল থাকলে চাকরি প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই ও চুড়ান্ত নিয়োগ পরীক্ষা কিভাবে নিলেন? সেটার ব্যপারে তিনি বলেন, তাতে আমাদের নিয়োগ বোর্ডের ভুল হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, বাইরে শুনা যাচ্ছে প্রধান শিক্ষক চাকরি প্রার্থী সজিবের নিকট ঘুস চেয়েছেন। লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্তে বিজ্ঞপ্তিতে ভুলের কারণে ফলাফল বাতিল করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি ভুল থাকলে চাকরি প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই ও চুড়ান্ত নিয়োগ পরীক্ষা কিভাবে নিলেন? সেটার ব্যপারে তিনি বলেন, আমাদের নিয়োগ বোর্ডের ভুল হয়েছে।