ফেনী প্রতিনিধিঃ
মাছুম চৌধুরী ও মাহফুজ। ফেনীর পরশুরামের চিথলীয়া ইউনিয়নের পশ্চিম অলকার এই দুই ভাই যখন এলাকাবাসীর সঙ্গে কাজ করছিলেন নদীর বাঁধরক্ষায়, তখনো হয়তো তারা বুঝতেও পারেননি জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ মুহূর্তটা অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।
সেই বাঁধটি মেরামতে ব্যর্থ হয়ে যখন বাড়িতে ফিরলেন, তখন দেখেন প্রবল স্রোতের ভেতরে আটকে আছেন তাদের মা, মাছুমের স্ত্রী ও মাত্র এক মাসের শিশু সন্তান।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আধঘণ্টার চেষ্টায় প্রিয়জনদের উদ্ধার করলেও হারিয়েছেন জীবন ও সংসারের শেষ চিহ্নটুকুও। চোখের সামনক নিজের নতুন বসতঘরের সর্বনাশ যেন নিজেই দেখলেন।
ঘরে নেই একটি পাতিল, নেই বিছানার চাদর, নেই একমুঠো চালও। সেই মুহূর্ত বলতে গিয়ে নিজের কান্না আটকে রাখতে পারেননি দিনমজুর মাছুম।
বর্তমানে মাছুম ও তার পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন বড় ভাইয়ের বাড়িতে। তবে মানসিক যন্ত্রণার পাহাড়টা যেন প্রতিদিন সময়ের সাথে সাথে আরও ভারী হয়ে উঠেছে।
মাছুৃম ও তার পরিবার বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি করছেন, ফেনীর এই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি টেকসই সমাধান। যাতে আর কখনো ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এমন ঘটনার সাক্ষী না হয়। বসতঘর না হারাতে হয় কাউকেই।
বন্যা চলে গেলেও ক্ষয়-ক্ষতির এমন চিত্র ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে। সব হারানো মানুষদের হাহাকারে ভারি হয়ে উঠছে চারপাশ।
ভারী বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে এবার ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে মুহুরী, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীতে বেড়িঁবাধের অন্তত ৩৬ স্থানে ভাঙন হয়। যার ফলে জেলার মানুষ কেউ হারিয়েছে বসতঘর, কেউবা মাছের ঘের, অনেকের নষ্ট হয়েছে ফসলি জমি, ঘটেছে ব্যবসায়িক লোকসান।
E-Mail: alokitosomoy24@gmail.com, Phone: 01711-186925,+8801319-229595